Hathazari Sangbad
হাটহাজারীরবিবার , ১৬ জুলাই ২০২৩

হাটহাজারীর পাইন্নে কচু রপ্তানি হচ্ছে বিদেশে

অনলাইন ডেস্ক
জুলাই ১৬, ২০২৩ ৭:৩৩ অপরাহ্ণ
Link Copied!

হাটহাজারী উপজেলার গুমানমর্দ্দন ইউনিয়নের গুমানমর্দ্দন বিলে গরীবের সবজি হিসেবে বেশি পরিচিত লতিরাজ কচু (পাইন্নে কচু) চাষে কোনো ঝুঁকি না থাকায় বাণিজ্যিক ভাবে কচু চাষ অধিক লাভজনক। তাই অন্যান্য ফসলের পরিবর্তে কৃষকেরা ঝুঁকিবিহীন কচু চাষে মনোযোগ দিচ্ছেন, উৎপাদিত পাইন্নে কচু এখন রপ্তানি হচ্ছে বিদেশে।

বিভিন্ন জায়গার কচু রান্না করে খাওয়ার সময় গলা চুলকানি থাকলেও গুমানমর্দ্দন বিলের কচু খাওয়ার সময় গলা চুলকায় না, একপ্রকার কাঁচা খেতে পারবে বলেও জানান কৃষকরা। ফলে এই কচু অতি সুস্বাদু এবং খুব সহজে রান্না করা যায়। এই পাইন্নে কচু চাষ করতে যেমন খরচ কম লাগে তেমনি উৎপাদিত কচু বিক্রি করে বেশ লাভবান হওয়া যায়। এসব কচু দেশের গন্ডি পেরিয়ে বিদেশেও রপ্তানি হচ্ছে। সরকারের সহযোগিতা পেলে আরো উৎপাদন বাড়িয়ে এই কচু বিদেশে আরো বেশি রপ্তানি করে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করতে পারবে বলে জানান কৃষকরা।

কৃষকরা বলেন, গুমানমর্দ্দন বিলে পাহাড়ি ঢলের সাথে পাহাড়ি মাটি এসে জমির উর্বরতা বৃদ্ধি হয়। যার ফলে এসব জমিতে কচু চাষ ভাল হয়, কচু গুলো সাইজে যেমন বড় হয় তেমন মোটা হয়। কচু চাষ করে কৃষকরা আর্থিকভাবে দুই থেকে তিনগুণ লাভবান হচ্ছে। প্রথমতো কচুর পাতা সবজি হিসেবে খাওয়া যায়, কচুর শক্ত শরীর ও কচুর লতি পুষ্টিকর তরকারি হিসেবে এবং কচুর গাছ থেকে মূল বা চারা হিসেবেও বিক্রি করা যায়।

তারা আরো বলেন, স্থানীয় মুরগির ফার্মসহ সবধরনের কারখানার আবর্জনা কৃষিজমির ক্ষতি করছে। বাজার থেকে মাছের উচ্ছিষ্ট ফেলে চাষাবাদের পরিবেশ নষ্ট করা হচ্ছে। এসব ক্ষতিকর আবর্জনা মাটিতে গর্ত করে পুতে দিলে একদিকে মাটির উর্বরতা বৃদ্ধি পাবে অন্যদিকে কৃষিজমি ঠিক থাকবে। তাতে চাষাবাদের পরিবেশটাও ঠিক থাকবে। সেইদিকে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও প্রশাসনের নজরদারি কামনা করেন কৃষকরা।

এ বিষয়ে গুমানমর্দ্দন ইউপি চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান বলেন, গুমানমর্দ্দনের মানুষ কৃষিবান্ধব, এই এলাকায় শুধু কচু নই দেশীয় বেগুন, বরবটি, ধান, হাটহাজারীর মিষ্টি মরিচ, খিরা ও কলা চাষের বেশ সুনাম রয়েছে। দেশের একমাত্র প্রাকৃতিক মৎস্য প্রজনন ক্ষেত্র বঙ্গবন্ধু মৎস্য হেরিটেজ হালদা নদীর পাড় ঘেঁষা জমি গুলোতে কচু চাষ বেশি হয়। বর্তমান সময়ে কচু চাষ একটি লাভজনক ব্যবসা। এই ব্যবসা দেশের অর্থনীতিতে ভূমিকা রাখতে পারে বলেও জানান তিনি।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোঃ আল মামুন শিকদার বলেন, গুমানমর্দ্দন বিলটা নিচু এলাকা হওয়ায় প্রায় বছরে ৬মাস পানিতে নিমজ্জিত থাকে ওই এলাকা। যার ফলে খুব ভাল ফলন হয়। ওই এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে তারা কচু চাষ করে আসছে। কচু চাষে যেমন সময় কম লাগে তেমন খরচও কম লাগে, এতে তিন থেকে চারগুণ লাভবান হয় কৃষকরা। বর্তমানে গুমানমর্দ্দনে প্রায় ত্রিশ হেক্টর জমিতে কচু চাষ হয়েছে। কচুতে গলা চুলকানি না থাকায় বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে এই কচু। এখন কচু গুলো বিদেশেও রপ্তানি হচ্ছে।