পারিবারিক ও সাংসারিক জীবনের কিছু বাস্তব সত্য যা আমরা দেখি সবসময়। অনেক সময় অনুভব করি তবে এমনভাবে এই বিষয়টি পাশকাটিয়ে যায় যেন কিছুই হচ্ছেনা পরিবারে কিছুই দেখিনা আমরা।
বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে যে সন্তান-সংসারের জন্য নিজের জীবন-যৌবন দিয়ে দেয়, শেষ পর্যায়ে সেই সন্তান হয়ে যায় পরিবারের মূল ভিলেন।
যে সন্তানের আর্থিক সাপোর্টে পরিবার নামক বিল্ডিংয়ের ফাউন্ডেশন তৈরী হয়, একটি সময় শুনতে হয় সে কি এমন করেছে!
যে সন্তানের স্ত্রী পরিবারের সকল ধরনের দায়িত্ব/কাজ একযুগ বা অর্ধযুগ ধরে করে আসে, সে হয়ে যায় সে পরিবারের জন্য সব চেয়ে খারাপ নিকৃষ্ট বউ বা ব্যক্তি।
যে সন্তান বছরের পর বছর পরিবারকে আর্থিক সাপোর্ট দেয়ার পরেও হঠাৎ কোন দূর্ঘটনায় আর্থিক অবস্থার অঘটন ঘটার পর আর্থিক সহায়তা কমিয়ে দেয় অথবা না-দিতে পারে, এই না দেওয়ার সময়টুকু বিষাক্ত সাপের চুবল থেকেও কষ্ট বেশি দেয় এবং সময়ে সময়ে অঘটনের সময় তাকে চালিয়ে নেয়ার কথাটি সময় হলেই চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দেয়।
যে সন্তান মা-বাবার খুশির জন্য নিজের প্রিয়জন-প্রয়োজন ছেড়ে ফেলে দেয়, থাকেই পরিশেষে শিখতে হয় পিতামাতাকে কিভাবে ভালোবাসতে হয়।
যে সন্তান সংসার জীবনের সমস্যা গুলো জেনেও চুপচাপ থাকে বা নিরব ভুমিকা পালন করার চেষ্টা করে তারই শশুড় বাড়ী ও আত্মীয় স্বজনের সাথে লেনদেন,আসা-যাওয়া, নাওয়াখাওয়া বন্দ করে দেয়।
এই সমস্যা থেকে উত্তরণের উপায়ঃ
কথাগুলো অনেকের জীবনের সাথে মিলে যাবে মিলে যাওয়াটাই স্বাভাবিক আমাদের সমাজের প্রেক্ষাপটে। তবে জীবনের দীর্ঘ একটি সময়-শ্রম-অর্থ পরিবারের জন্য নিঃস্বার্থে-নিঃসন্দেহে দিয়ে দেয়া প্রত্যেক সন্তানের প্রয়োজন। সে সময়টুকুর জন্য কোন আফসোস থাকতে নেই, না থাকা উচিত মা-বাবার থেকে কোন আবদার, না থাকা উচিত তার বিনিময়ে ভাই-বোনদের থেকে কোন প্রত্যাশা।
এই সময়টুকুর জন্যই একসময় কেউ ফিরে না-থাকালেও সৃষ্টিকর্তা ঠিকই থাকাবে। প্রকৃতি ঠিকই ঋতু পাল্টিয়ে এক সময় নিয়ে আসবে তার জীবনে ফাল্গুনী ঋতু। মহান আল্লাহতায়ালা পবিত্র কুরআনের সূরা (আদ-দাহার) এরশাদ করেছেন আল্লাহ’র নেক্কার বান্দারা মানুষের উপকার করে বলে- “কেবল আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্যে আমরা তোমাদেরকে আহার্য দান করি এবং তোমাদের কাছে কোন প্রতিদান ও কৃতজ্ঞতা কামনা করি না।” কুরআনের এই আয়াত আমাদের জীবনের চিন্তার জগতে প্রয়োগ করলে এই সমস্যা গুলো থেকে খুব সহজে বের হয়ে আসা যাবে।
লেখক : মোহাম্মদ মেহেদী হাসান মমতাজ