Hathazari Sangbad
হাটহাজারীশনিবার , ২০ এপ্রিল ২০২৪

মন্দিরে আগুনের পর দুইজন হত্যা, যা বলছেন নেটিজেনরা

অনলাইন ডেস্ক
এপ্রিল ২০, ২০২৪ ৮:১৫ অপরাহ্ণ
Link Copied!

ফরিদপুরের মধুখালী উপজেলার ডুমাইন ইউনিয়নের পঞ্চপল্লীতে বারোয়ারি মন্দিরের কালি প্রতিমায় আগুন লাগার ঘটনাকে কেন্দ্র করে বিক্ষুব্ধদের হামলায় দুই নির্মাণ শ্রমিক নিহত হয়েছেন।

নিহত দুই নির্মাণ শ্রমিক হলেন- মধুখালী উপজেলার নওয়াপাড়া ইউনিয়নের ঘোপেরঘাট গ্রামের শাহজাহান খানের ছেলে আশরাফুল (২১) ও তার ভাই আশাদুল (১৫)।

এই ঘটনায় সংবাদ সম্মেলন করেছে পুলিশ। সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মোর্শেদ আলম জানান, মন্দিরে আগুন দেওয়ার ঘটনায় নির্মাণ শ্রমিকদের সম্পৃক্ততার বিষয়ে স্পষ্ট কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। আগুন যেভাবেই লাগুক না কেন তা তদন্তে বেরিয়ে আসবে।

পুলিশ সুপার আরও বলেন, প্রতিমায় আগুন দেওয়ার ঘটনার পর দ্রুততম সময়ের মধ্যে গুজব ছড়িয়ে পড়ে এবং এতে বিক্ষুব্ধ হয়ে হামলায় অংশ নেয় মানুষ। এ ঘটনায় একাধিক মামলা দায়েরের বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, পঞ্চপল্লি গ্রামের কালী মন্দিরের আনুমানিক ৫০ গজ পাশেই পঞ্চপল্লি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় অবস্থিত। ওই বিদ্যালয়ের শৌচাগার নির্মাণের জন্য কয়েকজন শ্রমিক সেখানে কাজ করছিলেন। এর মধ্যে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার দিকে ওই মন্দিরের প্রতিমায় অগ্নিসংযোগ করে অজ্ঞাত ব্যক্তিরা। তখন এলাকাবাসী ধারণা করেন শ্রমিকরা মন্দিরে হামলা ও প্রতিমায় অগ্নিসংযোগ করেছে। এর জের ধরে এলাকাবাসী ওই স্কুলের একটি কক্ষে ওই শ্রমিকদের মোটা রশি দিয়ে বেধে বেদম প্রহার করে। এতে গুরুতর আহত হয় ৭ শ্রমিক।

ফরিদপুরের জেলা প্রশাসক মো. কামরুল আহসান তালুকদার বলেন, আহত ওই সাত শ্রমিককে উদ্ধার করতে গিয়ে এলাকাবাসীর প্রতিরোধের মুখে পড়ে পুলিশের সদস্যরা। তাদের লক্ষ্য করে ইটপাটকেলও ছোড়ে তারা। এ সময় পুলিশ ফাঁকা গুলি ও সাউন্ড গ্রেনেড ছুড়ে আহত সাতজনকে উদ্ধার করে ফরিদপুরের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠায়। রাতেই সেখানে দুইজনের মৃত্যু হয়। এলাকায় পুলিশ ও র‌্যাব মোতায়েন করা হয়েছে।

আব্রাহাম নামে একজন ফেসবুকে লিখেছেন, বাংলাদেশ কি ভারতের অঙ্গরাজ্য? কতটা নৃশংস ও ভয়ংকরভাবে শ্রমিকদের মেরেছে হিন্দুরা। শুধুমাত্র সন্দেহের বসে দুই মুসলিম কিশোরকে পিটিয়ে মেরেই ফেলল তারা। এ হত্যাকাণ্ডের কঠিন শাস্তি দাকি করছি।

মিথুন শাহ নামে একজন লিখেছেন, উগ্র ও ধর্মান্ধদের অতি দ্রুত আইনের আওতায় আনা হোক। সাইফুর রশিদ নামে একজন লিখেছেন, এমন ঘটনা কাম্য নয়। জড়িতদের দ্রুত শাস্তি দেওয়া হোক।

লেখক ও সিনিয়র সাংবাদিক মেহেদী হাসান পলাশ নামে একজন লিখেছেন, ফরিদপুরে মন্দিরে অগ্নিসংযোগের ঘটনা নিঃসন্দেহে নিন্দনীয়। কিন্তু এ ঘটনায় শুধুমাত্র সন্দেহের বশে মন্দির কর্তৃপক্ষ ৭ জন মুসলিম শ্রমিককে পিটিয়ে ২ জনকে হত্যা করেছে। ঘটনাটা যদি উল্টো হতো এতক্ষণে বাংলাদেশ কেঁপে উঠতো।

মো. শাকিব আহমেদ নামে একজন লিখেছেন, যারা এদেশে হিন্দুত্ববাদের রাজনীতি আমদানি করছে এর দায়ভার তাদেরকেই নিতে হবে। উগ্র হিন্দুত্ববাদীরা ভারতে যেমন করে বাংলাদেশেও তেমনই করতে চাচ্ছে। আর বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে ভয়ংকর এক ভবিষ্যতের দিকে।

শামিম আহমেদ নামে একজন লিখেছেন, কেউ মন্দিরে আগুন দেওয়ার মতো ন্যাক্কারজনক ঘটনা ঘটালে তার জন্য দেশে প্রচলিত আইন আছে বিচার করার জন্য। না দেখে শুধু সন্দেহের বশে কি কাউকে হত্যা করা যায়? এই পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ডের তীব্র নিন্দা জানাই। এছাড়া এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে দোষীদের বিচার চাই।

আকিবুল ইসলাম নামে একজন লিখেছেন, সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে প্রকৃত অপরাধীরা যেন কঠিন এবং দৃষ্টান্তমূলক সাজা পায়। শুধুমাত্র সন্দেহের বশবর্তী হয়ে এ রকম ঘটনা ঘটাবার সাহস এরা কোথা থেকে পায়।