Hathazari Sangbad
হাটহাজারীসোমবার , ১০ জুলাই ২০২৩
আজকের সর্বশেষ সবখবর

শ্রীলঙ্কায় কাঁঠাল খেয়ে বেঁচে আছে লাখ লাখ মানুষ

অনলাইন ডেস্ক
জুলাই ১০, ২০২৩ ৬:২২ অপরাহ্ণ
Link Copied!

এক সময় ফল হিসেবে সবচেয়ে অবজ্ঞা করা হতো কাঁঠালকে। এখন সেটাই মানুষের প্রাণ রক্ষাকারী আহার হয়ে দাঁড়িয়েছে।অর্থনৈতিক সংকটে থাকা শ্রীলঙ্কার লাখ লাখ মানুষ কাঁঠাল খেয়ে প্রাণে বেঁচে আছে।
দেশটিতে এক ডলারের বিনিময়ে ১৫ কেজি ওজনের কাঁঠাল পাওয়া যায়।
 
এক বছর আগে নজিরবিহীন অর্থনৈতিক সংকটে বিক্ষুব্ধ জনতার রোষের মুখে শ্রীলঙ্কার তৎকালীন সরকার ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর দেশটি এখন দারিদ্র্যে ধুঁকছে। খাবার জোগাড়ে হিমশিম খাচ্ছে দেশটির বড় একটি জনগোষ্ঠী। অনেকে কাঁঠাল খেয়ে জীবনধারণ করছেন।
 
তিন সন্তানের পিতা কারুপ্পাইয়া কুমার, পেশায় দিনমজুর। তিনি বলেন, ‘কাঁঠাল খেয়ে আমরা লাখ লাখ মানুষ প্রাণে বেঁচে আছি। অনাহারের হাত থেকে আমাদের বাঁচিয়ে রেখেছে এই কাঁঠাল। ’
 
৪০ বছর বয়সী মি. কুমার বলেন, ‘অর্থনৈতিক সংকটের আগে প্রতিটি মানুষের ভাত বা পাউরুটি কেনার ক্ষমতা ছিল। কিন্তু এখন খাবারের দাম এতটাই নাগালের বাইরে চলে গেছে যে বহু মানুষ প্রায় প্রতিদিন কাঁঠাল খেয়ে আছে। ’
 
শ্রীলংকার প্রায় এক তৃতীয়াংশ মানুষ খাদ্য নিরাপত্তার অভাবে রয়েছে। এখন প্রতি দুটি পরিবারের মধ্যে একটিকে বাধ্য হয়ে তাদের আয়ের ৭০ শতাংশের বেশি ব্যয় করতে হচ্ছে খাবারের ওপর।
 
তিন সন্তানের মা নাদিকা পেরেরা বলেন, ‘আগে আমরা তিন বেলা খেতাম। এখন খাচ্ছি দুই বেলা। ১২ কেজি ওজনের রান্নার গ্যাসের সিলিন্ডারের দাম গত বছর পর্যন্ত ছিল ৫ ডলার। ’
 
তিনি বলেন, ‘সিলিন্ডারের দাম এখন দ্বিগুণের বেশি বেড়ে গেছে। বাধ্য হয়ে পুরনো পদ্ধতিতে চুলা জ্বালিয়ে রাঁধতে হচ্ছে। ’
 
স্বামী ও সন্তান নিয়ে রাজধানী কলম্বোর ছোট একটি ফ্ল্যাটবাড়িতে থাকেন নাদিকা। সেখানে শোয়ার ঘর মাত্র দুটি। তিনি জাতীয় ক্যারাম চ্যাম্পিয়নশিপে দ্বিতীয় স্থানাধিকারী সাবেক প্রতিযোগী। পরে রেফারির দায়িত্ব পালন শুরু করেন।
 
কিন্তু ক্যারাম খেলায় রেফারি হয়ে তিনি যে অর্থ উপার্জন করতেন তা এখন বন্ধ। তার স্বামী এখন জীবিকার তাগিদে ভাড়ার ট্যাক্সি চালান।
 
নাদিকা বলেন, মাংস বা ডিম কেনার সামর্থ্য এখন আর নেই। এসবের দাম বেড়েছে ছয় গুণ। বাস ভাড়া এতটাই বেড়েছে যে বাচ্চাদের বাস ভাড়া জোগাতে পারছি না। ফলে প্রায়ই তাদের স্কুল কামাই করতে হচ্ছে।
 
শ্রীলঙ্কার মুদ্রাস্ফীতি জুন মাসে ১২ শতাংশে নেমে এসেছে। গত ফেব্রুয়ারিতে এটি ছিল ৫৪ শতাংশ। পরিবারগুলোর আয় কমে যাওয়ায় মূল্যবৃদ্ধি সামাল দিতে হিমশিম খাচ্ছে সরকার।
 
সূত্র- বিবিসি