Hathazari Sangbad
হাটহাজারীবুধবার , ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৪

২৪ ঘন্টার মধ্যে ভিডিও সরিয়ে বক্তব্য প্রত্যাহার করতে আকরামুজ্জামানকে লিগ্যাল নোটিশ

হাটহাজারী সংবাদ ডেস্ক:
ফেব্রুয়ারি ২৮, ২০২৪ ৪:৩৮ অপরাহ্ণ
Link Copied!

ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত দেওয়ায় আকরামুজ্জামান বিন আব্দুস সালামের বিরুদ্ধে চলছে সমালোচনার ঝড়। এবার তাকে পাঠানো হয়েছে লিগ্যাল নোটিশ।

আকরামুজ্জামানকে কুরুচিপূর্ণ বক্তব্যের ভিডিও ২৪ ঘন্টার মধ্যে সরাতে কিংবা ডিলিট করে নিতে বলা হয়েছে লিগ্যাল নোটিশে। এ ছাড়া উক্ত বক্তব্যের জন্য দুঃখ প্রকাশ পূর্বক উক্ত বক্তব্য প্রত্যাহার করতে বলা হয়েছে। অন্যথায় আইনের তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে উক্ত লিগ্যাল নোটিশে উল্লেখ করা হয়।

বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্টের এডভোকেট, হাইকোর্ট বিভাগ ও জজ কোর্ট চট্টগ্রামের এস.এম. জিল্লুর রহমান গতকাল মঙ্গলবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) ডাকযোগে এ নোটিশ প্রেরণ করেন।

নোটিশে বলা হয়, বিগত ২৫/০২/২০২৪ ইং হতে ২৬/০২/২০২৪ ইং তারিখে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইসবুক ও ইউটিউব চ্যানেলে আপনি অত্র নোটিশ গ্রহীতার বক্তব্যের একটি ভিডিও আমি অত্র নোটিশ দাতার দৃষ্টিগোচর হয়। আপনি আপনার উক্ত বক্তব্যে বলেছেন- “১৪ই শাবান (তথা শবে বরাতের) রাত্রীতে এভাবে মসজিদে ভীড় না করে যদি বেশ্যাখানায় কাটায় তারপরও ভালো এর চেয়ে সারারাত যদি সে বেশ্যাখানায় থাকে সেটাও ভালো।” অন্য জায়গায় বলেছেন- “শবে বরাত যিনার চেয়েও খারাপ।” অথচ- হাদিসে হযরত আবূ হুরাইরা রাযিঃ থেকে বর্ণিত, হযরত রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ “আমাদের বরকতময় মহান প্রতিপালক প্রত্যহ রাত্রের শেষ তৃতীয়াংশে নীচের আসমানে অবতরণ করেন এবং বলেনঃ কে আমাকে ডাকে? আমি তার ডাকে সাড়া দেব। কে আমার নিকট প্রার্থনা করে? আমি তাকে দান করব এবং কে আমার নিকট ক্ষমা চায়? আমি তাকে ক্ষমা করব। (ফজর পর্যন্ত এ আহ্বান চলতে থাকে।)” সনদ সহীহ। (সহীহুল বুখারী ১১৪৫, ৬৩২১, ৭৪৯৪ হাদীস। সহীহু মুসলিম ১৮০৮-১৮১৩, হাদীস। মিশকাত শরীফ ১২২৩ হাদীস।) কিন্তু শবে বরাতের রজনীতে আল্লাহ তায়ালা সূর্যাস্তের সাথে সাথেই দুনিয়ার আকাসে চলে আসেন।

আরও বলা হয়, হাদিসে হযরত আলী রাযিঃ সূত্রে বর্ণিত, হযরত রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেনঃ “তোমরা মধ্য শা’বানের রজনীতে জাগ্রত থাকো এবং তারপর দিন রোযা রাখো। কেননা এ রাতে সূর্যাস্তের সময় আল্লাহ তায়ালা দুনিয়ার আসমানে অবতরণ করেন এবং বলেতে থাকেন, আছো কি কেউ ক্ষমা প্রার্থনাকারী? আমি তাকে ক্ষমা করে দেব। আছো কি কেউ রিযিক যাচনাকারী? আমি তাকে রিযিক প্রদান করব। আছো কি কোনো বিপদগ্রস্ত? আমি তাকে বিপদ থেকে মুক্তিদান করব। এরূপ কেউ আছো কি? এরূপ কেউ আছে কি?এভাবে সুবহে সাদিক পর্যন্ত আহ্বান করতে থাকেন।” উপরে বর্ণিত হাদীস অনুপাতে এই হাদীসের বিষয় বস্তুও সহীহ। (সুনানে ইবনে মাজাহ ১৩৮৮ হাদীস। শু’আবুল ঈমান-৩৫৪২ হাদীস। মিশকাতুল মাসাবীহ ১৩০৮ হাদীস। কানযুল উম্মাল ৩৫১৭৭ হাদীস।)

আপনার উক্ত বক্তব্যে দেখা ও শুনা যায় যে, আপনি মুসলমান ধর্মাবলম্বীদের প্রিয় একটি দিন ও একটি অতি পবিত্র ও বরকতময় রাত শবে বরাত তথা ১৪ই শাবান দিন গত রাতে ইবাদত করাকে চরম অবমাননাকর, কুরুচিপূর্ণ ও অশ্রাব্য ভাষায় কটূক্তি পূর্বকভাবে মুসল্লীদের ও শ্রোতাদের কাছে উপস্থাপন করেছেন। যাহা পৃথিবীর লক্ষ কোটি ধর্মপ্রাণ মুসলমানের হৃদয়ে আঘাত করেছে এবং অত্র নোটিশ দাতাও আপনার উক্ত বক্তব্য শুনে খুবই মর্মাহত। আপনি একজন মুসলিম ধর্মের অনুসারী হয়ে উক্ত পবিত্র শবে বরাতের রাতকে নিয়ে কটূক্তি করা এবং সমাজের মধ্যে বিবেদ সৃষ্টি করাটা ইসলামি ও প্রচলিত আইন অনুযায়ী অপরাধ বটে যাহা আমাদের দেশীয় আইনের আলোকেও অপরাধ, আমাদের দেশের ধর্মপ্রাণ মুসলমানগণ, বিভিন্ন সিলসিলার অনুসারী পীর-মাশায়েক ও সম্মানিত আলেম ওলামাগণ হাজার বছর যাবৎ যথাযথ মর্যাদায় এবং পবিত্রতার সাথে শান্তিপূর্ণ ভাবে এই মহান বরকতময় রজনী ১৪ই শাবান রাত্রীতে মহান আল্লাহর নৈকট্য লাভের উদ্দেশ্যে ও নিজ নিজ গুনাহ ক্ষমা চেয়ে সঠিক পথ এবং সুন্দর ভবিষ্যৎ প্রার্থনায় মসজিদে নামাজ, জিকির, কুরআন তেলাওয়াতসহ সাধ্যমত নফল ইবাদত বন্দেগীর মাধ্যমে ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্য্যপূর্ণ পরিবেশে যথাযথ মর্যাদায় উদযাপন করে আসছেন। আপনার উক্ত বক্তব্য মসজিদের মত পবিত্র জায়গাকে কেবল অবমাননাই করেনি, পবিত্র আল্লাহর ঘরকে নিকৃষ্ট জায়গার সাথে তুলনা করায় আমি নোটিশ দাতার হৃদয়ে রক্তক্ষরণ করেছে। আপনার এই বক্তব্য ধর্মপ্রাণ মুসলিম উম্মাহর ধর্ম চর্চায় চরম আঘাত সৃষ্টি করে এবং এই দেশে ধর্মীয় সম্প্রীতি বিনষ্ট করে একে অপরের প্রতি উষ্কানি দেওয়ার মনোভাব প্রকাশিত হয়। উল্লেখ্য যে উক্ত ১৪ই শাবান রাত্রিতে ইবাদত বন্দেগী শেষে ১৫ই শাবান বাংলাদেশ সরকার একদিনের জন্য সরকারী ছুটি প্রদান করেন এবং প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় উক্ত রাতের মর্ম নিয়ে ক্রোড়পত্র ও সংবাদ পরিবেশন করে থাকে, যা থেকে পরিলক্ষিত হয় যে, সরকার কর্তৃক এই দিবস স্বীকৃত। সুতরাং আপনার উক্ত বক্তব্য সরকারী সিদ্ধান্তেরও পরিপন্থী ।