Hathazari Sangbad
হাটহাজারীমঙ্গলবার , ২৭ ডিসেম্বর ২০২২
আজকের সর্বশেষ সবখবর

বাবার ফাঁসি চাইলো ৪ বছরের মুসকান

অনলাইন ডেস্ক
ডিসেম্বর ২৭, ২০২২ ৭:০৪ অপরাহ্ণ
Link Copied!

বাবার ফাঁসি চেয়ে মানববন্ধন করেছে ৪ বছরের শিশু মুসকান। মায়ের হত্যার বিচার চেয়ে মঙ্গলবার (২৭ ডিসেম্বর) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে মুন্সীগঞ্জ প্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধনে অংশ নেয় মুসকান ছাড়াও শতাধিক নারী-পুরুষ।
 
জেরিন হত্যার বিচার চেয়ে হত্যাকারীদের ফাঁসির দাবিতে নৈরপুকুর পাড় এলাকাবাসীর ব্যানারে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
এ সময় জেরিনের মেয়ে মুসকান তার বাবা মো. মুরাদ হোসেনের (৩৫) বিচার চেয়ে বলে, আমার বাবায় আরেকটা বিয়ে করতে চাইছিল। এজন্য বাবায় মায়রে মাইরা ফেলাইছে। ওড়না দিয়া পেচাইয়া মাইরা ফেলাইছে।
 
মানববন্ধনের অংশ নেওয়া জেরিনের মা সাহিদা বেগম বলেন, আমার মেয়ে প্রথম বাচ্চা নেওয়ার পর তার জরায়ুতে সমস্যা দেখা দেয়। এ কারণে ডাক্তার ২য় বাচ্চা নিতে নিষেধ করছিল। কিন্ত তার স্বামী জোড় করে ২য় বাচ্চা নিতে চায়। এতে আমার মেয়ে গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়ে।
 
পরে আমরা তাকে মুন্সীগঞ্জ সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে ডাক্তার অন্যকোথাও উন্নত চিকিৎসা নিতে বলে। পরে আমরা মেয়েকে আদ্বদ্বীন হাসপাতালে নিয়ে গিয়ে ১৫ দিন ভর্তি রেখে চিকিৎসা করাই। ওই সময় ডাক্তার বলে মেয়েকে বাঁচাতে হলে জরায়ু কেটে ফেলতে হবে।
এ সময় তার স্বামীর সম্মতিক্রমে ডাক্তার তার জরায়ু কেটে ফেলে। কিন্তু আমার মেয়ে বাসায় ফেরার পর তার শাশুড়ি ননদসহ অন্যান্য আত্মীয়-স্বজনরা বিভিন্ন কুপমার্শ দেয় মুরাদকে। বলে তার তো আর বাচ্চা হইবোনা। তুই আবার বিয়ে কর। তোর ভবিষৎ আছে। তার মা-বোনদের কুপরামর্শে আমার মেয়েকে বিভিন্নভাবে অমানবিক নির্যাতন করতে থাকে তারা। ওরা নির্যাতন করে আমার মেয়েকে মাইরা ফেলাইছে। মাইরা ফালানোর পরে ওরা বাথরুমে নিয়া যায় এ সময় আমার স্বামী মেয়ের মোবাইলে ফোন দিলে আমার নাতিন মুসকান বলে, নানা ভাই আমার বাবা আমার মাকে মাইরা ফেলাইছে। এ কথা শুনে সেখান গেয়ে জেরিনকে উদ্ধার করে হাসপাতাল নিয়ে গেলে ডাক্তার আমার মেয়েকে মৃত ঘোষণা করেন।
 
প্রসঙ্গত, গত ২৪ ডিসেম্বর রাতে মুন্সীগঞ্জ সদর উপজেলার মিরেশ্বরাই গ্রামের স্বামীর বাড়িতে রহস্যজনকভাবে মারা যান জেরিন। পরে পুলিশ মুন্সীগঞ্জ সদর হাসপাতাল থেকে জেরিনের লাশ উদ্ধার করে। জেরিন সদর উপজেলার নৈরপুকুর পাড় গ্রামের জামাল ভূঁইয়ার মেয়ে।
 
২০১৬ সালে একই উপজেলার মীরশ্বরাই গ্রামের মনির হোসেনের ছেলে মুরাদ হোসেনের সঙ্গে তার বিয়ে হয়। বৈবাহিক জীবনে মুসকান (৪) নামের তাদের এক কন্যা সন্তান রয়েছে। এ ঘটনায় জেরিনের মা সাহিদা বেগম বাদী হয়ে মুরাদ হোসেন, তার বাবা মনির হোসেন, মা উম্মে কুলসুম এবং বোন মনিকা শারমিনকে বিবাদী করে মুন্সীগঞ্জ সদর থানায় একটি মামলা দায়ের করে।
 
এ ঘটনায় পুলিশ মুরাদ হোসেনকে গ্রেপ্তার করে মুন্সীগঞ্জ আদালতের মাধ্যমে কারাগারে প্রেরণ করে। বাকি আসামিরা পলাতক রয়েছে।
এ ঘটনায় মুন্সীগঞ্জ সদর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. তারিকুজ্জামান বলেন, এ ঘটনায় মামলার মূল আসামিকে গ্রেপ্তার করে আদালতের মধ্যেমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। মামলাটি তদন্ত চলছে।