দেশের বিভিন্ন জেলায় মোটরসাইকেল চুরিতে জড়িত থাকার অভিযোগে তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে চট্টগ্রাম নগরের কোতোয়ালি থানা পুলিশ।
বুধবার (৪ অক্টোবর) ও বৃহস্পতিবার (৫ অক্টোবর) চট্টগ্রাম, কক্সবাজার ও কুমিল্লা জেলায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। এসময় তাদের কাছ থেকে বিভিন্ন ব্র্যান্ডের ১৩টি চোরাই মোটরসাইকেল জব্দ করা হয়।
গ্রেপ্তাররা হলেন, চট্টগ্রামের পটিয়া উপজেলার আবদুল আলীমের ছেলে মো. রিপন (৩২), কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম উপজেলার মনু মিয়ার ছেলে আব্দুল কাদের জিলানী ওরফে অভি (২৬) ও কক্সবাজারের মহেশখালী উপজেলার মো. মোস্তাকের ছেলে সজিবুল ইসলাম (২১)।
পুলিশ জানায়, গ্রেপ্তারদের মধ্যে রিপন মোটরসাইকেল চুরি চক্রের মূলহোতা। তার বিরুদ্ধে চট্টগ্রামের কোতোয়ালি, বাকলিয়া, পাঁচলাইশ, পটিয়া, ফেনী সদর থানা ও কুমিল্লার নাঙ্গলকোর্ট থানায় মোট আটটি মোটরসাইকেল চুরির মামলা রয়েছে। এসব মামলায় আদালতে হাজিরা দিতে গেলে রিপন প্রায় সময়ই ফেরার পথে নতুন করে আবার মোটরসাইকেল চুরি করে।
পরে এসব চোরাই মোটরসাইকেল কুমিল্লার আব্দুল কাদের জিলানী ও কক্সবাজারের সজিবুল ইসলামের কাছে বিক্রি করে। আবার কক্সবাজার গেলে চোরাই মোটরসাইকেল বিক্রি করে ফেরার পথে সেখান থেকে আরেকটি চুরি করে কুমিল্লা নিয়ে যায়। কুমিল্লায় চোরাই মোটরসাইকেল বিক্রি করে সেখান থেকে আরেকটি চুরি করে কক্সবাজার নিয়ে যায়।
কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাহিদুল কবির বলেন, দীর্ঘদিন ধরে এভাবে চক্রাকারে মোটরসাইকেল চুরি করতে থাকা রিপনকে বিশেষ অভিযানে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। একইসঙ্গে রিপনের চোরাই মোটরসাইকেল বিক্রিতে সহযোগিতা করার অভিযোগে আরও দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে কোতোয়ালি থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মিজানুর রহমান চৌধুরী বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেছেন। সেই মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আজ (বৃহস্পতিবার) গ্রেপ্তার তিনজনকে আদালতে পাঠানো হয়েছে।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও কোতোয়ালি থানার এসআই মেহেদী হাসান বলেন, রিপন মোটরসাইকেল চুরির জন্য একটি বিশেষ মাস্টার চাবি বানিয়েছে। এই চাবি দিয়ে মুহূর্তেই সে বিভিন্ন ব্র্যান্ডের মোটরসাইকেলের লক খুলে ফেলতে পারে। তার বিরুদ্ধে আগে দায়ের হওয়া মামলায় আদালতে হাজিরা দিতে যাওয়ার সময় অটোরিকশা দিয়ে যায়। পরে হাজিরা শেষে আদালত পাড়ায় কিছুক্ষণ ঘুরাঘুরি করে আরেকটি মোটরসাইকেল চুরি করে কুমিল্লা চলে যায়।
তিনি বলেন, কুমিল্লায় গিয়ে আব্দুল কাদের জিলানীর কাছে চোরাই মোটরসাইকেলটি বিক্রি করে। এরপর কুমিল্লায় দুয়েকদিন আবাসিক হোটেলে অবস্থান করে। পরে হাসপাতাল-ক্লিনিক ও জনবহুল স্থান থেকে সুযোগ বুঝে আরেকটি মোটরসাইকেল চুরি করে মহেশখালী নিয়ে যায়।
তিনি আরও বলেন, মহেশখালী রিপনের শ্বশুর বাড়ি। সেখানে চোরাই মোটরসাইকেলগুলো সে বর্ডার ক্রস গাড়ি বলে বিক্রি করে। কয়েকদিন মহেশখালী থেকে চট্টগ্রাম ফেরার পথে সে বিভিন্ন স্থান থেকে মোটরসাইকেল চুরি করে কুমিল্লা নিয়ে যায়।