নগরীর চাক্তাই–খাতুনগঞ্জে লাগামহীন হয়ে পড়েছে পেঁয়াজের বাজার। মূলত পেঁয়াজ রপ্তানিতে ভারতের ৪০ শতাংশ শুল্ক আরোপের খবরে ব্যবসায়ীরা পণ্যটির দাম একদিনের ব্যবধানে কেজি ২০ টাকা বাড়িয়ে দিয়েছেন। পেঁয়াজের এমন অস্বাভাবিক দাম বৃদ্ধিতে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন সাধারণ ভোক্তারা। তারা বলছেন, ভারত তাদের বাজার ঠিক রাখতে রপ্তানিতে ৪০ শতাংশ শুল্ক আরোপের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। কিন্তু সেই সিদ্ধান্ত কার্যকর হওয়ার আগেই আমাদের দেশের ব্যবসায়ীরা সিন্ডিকেট করে দাম বাড়িয়ে দিয়েছেন। বাজারে যেসব পেঁয়াজ আছে সেগুলো আগেই আমদানি হয়েছে। তবে ব্যবসায়ীরা বলছেন, শুল্ক বৃদ্ধির খবরে বাজারে পেঁয়াজের বেচাবিক্রি বেড়ে গেছে। হঠাৎ করে চাহিদা বাড়ার কারণে দাম বেড়েছে।
চাক্তাই–খাতুনগঞ্জের পাইকারি বাজারে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত শনিবার বাজারে পেঁয়াজ বিক্রি হয় ৪৫–৪৬ টাকায়। কিন্তু ভারত রপ্তানি শুল্ক আরোপের জেরে একদিনের ব্যবধানে পেঁয়াজের দাম কেজিতে ২০ টাকা বেড়ে এখন বিক্রি হচ্ছে ৬৫ টাকায়।
জানা গেছে, বর্তমানে দেশে তাহেরপুরী, বারি–১ (তাহেরপুরী), বারি–২ (রবি মৌসুম), বারি–৩ (খরিপ মৌসুম), স্থানীয় জাত ও ফরিদপুরী পেঁয়াজ উৎপাদন হয়। ফলে বছর জুড়ে কোনো না কোনো জাতের পেঁয়াজ উৎপাদন হচ্ছে। দেশে বছরে পেঁয়াজের চাহিদা ২২ লাখ টন। এর মধ্যে ১৮ লাখ টন স্থানীয়ভাবে উৎপাদন করা হয়। আমদানি করা হয় বাকি চার লাখ টন। মূলত এই আমদানিকৃত চার লাখ টন পেঁয়াজ বাজারে বড় প্রভাব ফেলে।
কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব) চট্টগ্রাম বিভাগীয় সভাপতি এসএম নাজের হোসাইন বলেন, ব্যবসায়ীরা একেক সময় একেক অজুহাতে ভোগ্যপণ্যের দাম বৃদ্ধি করে যাচ্ছেন। কয়েক মাস আগে দেশি পেঁয়াজের কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করে পেঁয়াজের দাম কেজিতে ১০০ টাকার উপরে নিয়ে যান ব্যবসায়ীরা। তখন ভারতীয় পেঁয়াজ আমদানি হওয়ায় রাতারাতি দাম কমে যায়। কিন্তু এখন ভারতীয় পেঁয়াজের রপ্তানি শুল্ক বৃদ্ধি করার সিদ্ধান্তের সাথে সাথে ব্যবসায়ীরা দাম বাড়িয়ে দিয়েছেন। বর্তমানে বাজারে যেসব পেঁয়াজ আছে সেগুলো আমদানিতে ৪০ শতাংশ বাড়তি শুল্ক দিতে হয়নি। এতে পরিষ্কার বোঝা যায়, ব্যবসায়ীরা ইচ্ছেমতো দাম বৃদ্ধি করছেন। তাই প্রশাসনকে বাজারে মনিটরিং নিশ্চিত করতে হবে।