Hathazari Sangbad
হাটহাজারীসোমবার , ১৭ এপ্রিল ২০২৩
আজকের সর্বশেষ সবখবর

দামে ‘কম’, মানে ‘ভালো’ হকার মার্কেটের পোশাক

অনলাইন ডেস্ক
এপ্রিল ১৭, ২০২৩ ৮:১৯ অপরাহ্ণ
Link Copied!

৬০-৭০ বর্গফুটের ছোট একটি দোকানে নানা রঙের পাঞ্জাবির পসরা সাজিয়ে ক্রেতা ডাকছিলেন হকার মার্কেটের দোকানি মোহাম্মদ ইদ্রিস। ‘দামে কম, মানে ভালো- হকার মার্কেটের পোশাক। বেছে নেন, দেখে নেন- ভালো মানের পাঞ্জাবিসহ ক্রেতা টানতে নানা বুলি তার মুখে। ক্রেতাদের কেউ পাঞ্জাবির মাপ-রং পরখ করছিলেন, কেউ ব্যস্ত দামাদামিতে। পছন্দের পোশাক সাধ্যের মধ্যে মিললেই কিনে নিচ্ছেন অনেকে। ঈদকে সামনে রেখে বেচা-কেনা এখন জমজমাট ইদ্রিসের দোকানে। শুধু ইদ্রিসের দোকান নয়-মধ্য-নিম্ন আয়ের মানুষের মার্কেট হিসেবে পরিচিত নগরীর জহুর হকার মার্কেটের প্রায় প্রতিটি দোকানেই এখন ক্রেতাদের ভিড়। জমজমাট বেচা-কেনা।

ব্যবসায়ীরা বলছেন-বেতন-বোনাস পাওয়ার পর গভীর রাত পর্যন্ত ক্রেতারা হকার মার্কেটে আসছেন। সপ্তাহখানেক ধরে প্রতিদিনই ভিড় বাড়ছে। শার্ট, প্যান্ট, পাঞ্জাবি, ছোটদের পোশাক, মেয়েদের টপস, ওয়ান পিস কেনার পাশাপাশি পোশাক অল্টারিং করাচ্ছেন। পর্দা, বেডসিট, বেল্টও কিনছেন কেউ কেউ। হকার মার্কেটের দোকানি মোহাম্মদ দিদারুল আলম শনিবার রাতে জানান, ১৫ রমজানের পর থেকেই ঈদের কেনাকাটা বেড়েছে। রবিবার অফিস-আদালত খোলার দিন হওয়ায় অন্য দিনের তুলনায় কয়েকগুণ বেশি বিক্রি হবে বলে আশা করি। একই মার্কেটের দোকানি জাহিদুল ইসলাম জানান, করোনার কারণে প্রায় তিন বছর পর প্রত্যাশা অনুযায়ী বিক্রি হচ্ছে। ক্রেতাদের পছন্দের বিভিন্ন প্রকারের প্যান্ট দোকানে তুলেছি। দামে কম, মানে ভালো পোশাক পেয়ে ক্রেতারাও খুশি। এবার বিক্রি ভালো।

এদিকে হকার মার্কেটের পাশাপাশি হকারদের ‘স্বর্গরাজ্য’ হিসেবে পরিচিত নগরীর নিউমার্কেট এলাকার ফুটপাতেও ঈদের কেনাকাটায় ভিড় করছেন নি¤œ আয়ের মানুষ। কম দামের শার্ট, প্যান্ট, শাড়ি, বেডসিট, বালিশের কাভার, গেঞ্জি, বডি স্প্রে, শ্যাম্পু, গৃহাস্থালির নানা পণ্যের পসরা সাজিয়ে ফুটপাতে বসেছেন কয়েক হাজার হকার। কেউ কেউ ফুটপাতে জায়গা না পেয়ে ভ্যান নিয়ে দাঁড়িয়েছেন সড়কে। সেখানেও চলছে বিকিকিনির ধুম।

একই চিত্র দেখা গেছে, নগরীর জিইসি, কোতোয়ালী, দেওয়ান হাট, দুই নম্বর গেট, চকবাজার এবং মুরাদপুর এলাকায়ও। নিম্ন আয়ের মানুষেরা এসব এলাকার হকারদের ভ্যানের সামনে ভিড় করেন। পরিবারের জন্য কেনাকাটা করেন। তাদের একজন জেসমিন আক্তার। তিনি জানান, স্বামীর জন্য শার্ট আর মেয়েদের জন্য জামা কিনতে আসা। এরপর জুতা, কসমেটিক্স নেবো। দাম বেশি দাবি করলেও বেশি দিইনি। দরদাম করেই কিনেছি।

ক্রেতাদের চাপে কথা বলার ফুরসত ছিলো না চকবাজার এলাকার হকার কুদরত মিয়ার। বিকিকিনির ফাঁকে তিনি জানান, গত সপ্তাহে একদম বেচাকেনা ছিলো না। খরচের টাকা পর্যন্ত ওঠেনি। তবে গত শুক্রবার থেকে ক্রেতা পাচ্ছি। এখন বিক্রি ভালো। আগামী কয়েকদিন এটি অব্যাহত থাকলে ঈদটা ভালোভাবে কাটাতে পারবো। স্ত্রী-সন্তানদের কাছে যেতে পারবো।

বন্দরনগরী চট্টগ্রামে এলাকাভিত্তিক মোট ২১টি হকার সংগঠন রয়েছে। এসব সংগঠনের নেতারা জানিয়েছেন- তাদের তালিকা অনুযায়ী নগরীতে প্রায় ২০ হাজার হকার আছেন। এরমধ্যে নিউ মার্কেট, রেল স্টেশন, আগ্রাবাদ এলাকা, জিইসি মোড় এবং ২ নম্বর গেটে সবচেয়ে বেশি হকার বসেন। সব মিলিয়ে এবার ঈদে ফুটপাতে ১০০ কোটি টাকার বেশি লেনদেন হতে পারে।