Hathazari Sangbad
হাটহাজারীবৃহস্পতিবার , ৬ এপ্রিল ২০২৩
আজকের সর্বশেষ সবখবর

টার্গেট ঈদ বাজার, সক্রিয় ছিনতাইকারীরা

অনলাইন ডেস্ক
এপ্রিল ৬, ২০২৩ ৮:০৩ অপরাহ্ণ
Link Copied!

প্রতি বছর রমজান মাস এলেই নগরীর মার্কেট, শপিং মল, রাস্তাঘাটে সক্রিয় হয়ে উঠে ছিনতাইকারী চক্র। বেড়ে যায় এদের দৌরাত্ম্য। রমজানে বিশেষ করে ইফতারের আগে–পরে এবং সেহেরির পরই ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটছে। তাই এ ধরনের অপরাধ ঠেকাতে তিন স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়েছে বলে জানিয়েছে সিএমপি। নিরাপত্তার অংশ হিসেবে নগরীর ১৬ থানায় প্রতিদিন পুলিশের তিনটি টিম কাজ করছে। পবিত্র রমজান মাসে মানুষকে নিরাপত্তার বলয়ে আনতে এ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। কিন্তু তাতে ভরসা রাখতে পারছেন না খোদ সিএমপি কর্মকর্তাদের অনেকেই। মাঠ পর্যায়ের সিএমপি কর্মকর্তাদের মতে পনের রোজার পর মানুষ যখন ঈদের কেনাকাটায় ব্যস্ত হয়ে পড়বে, তখন ছিনতাই চক্রগুলোর দাপট আরো বাড়বে।
 
সিএমপির অতিরিক্ত উপ কমিশনার (দক্ষিণ) নোবেল চাকমা  বলেন, রমজান মাসে ছিনতাই ঠেকানোই আমাদের মূল টার্গেট। ছিনতাইকারীদের আগের গ্রুপগুলো এখন নতুন সদস্য সংগ্রহের মাধ্যমে বিভিন্ন উপগ্রুপে ভাগ হয়ে ছিনতাই করে বেড়াচ্ছে। তবে আমরাও মাঠে আছি। একের পর এক ছিনতাইকারী গ্রুপ ধরা পড়ছে। যাদের অনেকের নামে নগরীর বিভিন্ন থানায় ৪/৫টি করে মামলা আছে। রমজানের প্রথম অবস্থায় তাদের গ্রেপ্তার করে উপগ্রুপগুলো ভেঙে দেওয়াই আমাদের মূল টার্গেট।
 
সিএমপির সহকারী কমিশনার (পশ্চিম) এ কে এম মহিউদ্দিন সেলিম  বলেন, রোজা, ঈদ ও দুর্গা পূজা আসলে চট্টগ্রাম নগরীতে ছিনতাইকারীদের তৎপরতা বেড়ে যায়। এজন্য সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। পেশাদার ছিনতাইকারীদের মধ্যে কতজন জেলে আছে, কারা জামিনে বাইরে আছে, নতুন ছিনতাইকারীদের অবস্থান ইত্যাদি তথ্য যাচাই বাছাই করে অভিযান চলছে। তিনি বলেন, সিএমপির বিভিন্ন জোনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা এবং ১৬ থানার ওসিকে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
 
মাঠ পর্যায়ের পুলিশ কর্মকর্তাগণ জানান, পথচারীকে অনুসরণ করে নির্জন স্থানে আটকে ছোরার ভয় দেখিয়ে সর্বস্ব লুটে নিচ্ছে ছিনতাইকারীরা। ছিনতাই কাজে জড়িত থাকে ৫ থেকে ১০ জন। তাদের মধ্যে কয়েকজন টার্গেটকে আটকে ছিনিয়ে নিচ্ছে টাকা মোবাইল মূল্যবান স্বর্ণালঙ্কার। শুধু তাই নয়, আরও ২ থেকে ৩ জন থাকে পুলিশ আসছে কিনা তদারকিতে।
 
কোতোয়ালী থানার ওসি জাহিদুল কবীর বলেন, রোজার মাস শুরুর আগে থেকেই আমরা মাঠে নেমেছি। ঈদ পর্যন্ত তা অব্যাহত থাকবে। তিনি বলেন, মাঠে কাজ করতে গিয়ে দেখতে পেয়েছি, ছিনতাই চক্রে অনেক নতুন মুখ। পুরনোরাও আছে। আরেকটা বিষয় উল্লেখযোগ্য হলো কোতোয়ালী থানার তালিকাভুক্ত ছিনতাকারীরা ছিনতাই করছে ডবলমুরিং বা বন্দর থানা এলাকায়। আবার সদরঘাট থানার ছিনতাইকারীরা ছিনতাই করছে কোতোয়ালী বা চান্দগাঁও এলাকায়। এদের প্রায় সবাই মাদকাসক্ত। তাই অস্ত্র ঠেকিয়ে কিছু না পেলে বা দিতে দেরি হলে ছুরিকাঘাত করছে। তিনি বলেন, চট্টগ্রাম রেলওয়ে স্টেশনে টিকিট কাটতে আসা এক ব্যক্তির দুই হাঁটু ও উঁরুতে ছুরিকাঘাত করে মোবাইল ও নগদ অর্থ ছিনিয়ে নেওয়া তিন ছিনতাইকারীকে গ্রেপ্তারের পর এ তথ্য উঠে এসেছে।
 
ব্যবসায়ীরা বলছেন, রমজানে বেশির ভাগ ক্রেতাই ইফতারের পর মার্কেটে কেনাকাটা করতে আসেন। সন্ধ্যার পর মার্কেটগুলোতে বাড়ে ক্রেতাদের আনাগোনা। ওই সময়ে নিরাপত্তা নিবিঘ্ন করতে আইনশৃঙ্খলার সদস্যরা ব্যবসায়ীদের আশ্বস্ত করেছেন।
 
বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা জাহিদুল ইসলাম আজাদীকে বলেন, ঈদ এলে পরিবারের সদস্যদের নিয়ে বিভিন্ন শপিং মলে যেতে হয়। দিনে রোজা রেখে তা সম্ভব হয় না। তাই বেশির ভাগ সময় ইফতারের পর বের হই।
 
আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর দাবি, বড় কোনো ঘটনা না ঘটলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নজরে আসে না। আর সাধারণ মানুষের পুলিশ রেকর্ড (জিডি/মামলা) না করার প্রবণতাও বাড়ছে।
 
প্রসঙ্গত, সিএমপির ১৬ থানার বিভিন্ন্ন গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে স্থায়ী পিকেট ডিউটি, ফুট পেট্রোল ডিউটি ও হোন্ডা মোবাইল ডিউটি থাকবে। প্রতিদিন বিকেল তিনটা থেকে একজন উপ–পরিদর্শক (এসআই) ও একজন সহকারী উপ–পরিদর্শকের নেতৃত্বে পুলিশের একাধিক নারী ও পুরুষ কনস্টেবল দায়িত্ব পালন করবেন। তাদের সার্বক্ষণিক মনিটরিংয়ে থাকবেন প্রত্যেক থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি)। ১৫ রমজান পর্যন্ত এভাবে নিরাপত্তা বলয় থাকবে। এরপর নতুন করে আবারও ঢেলে সাজানো হবে নিরাপত্তা ব্যবস্থা।