চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশের (সিএমপি) কনস্টেবল শওকত হোসেনকে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে। গত ১৬ এপ্রিল তার চাকরিচ্যুতির আদেশে স্বাক্ষর করেন সিএমপির বন্দর বিভাগের উপ-কমিশনার শাকিলা সোলতানা। আদেশের কপি পাঠানো হয়েছে সিএমপি কমিশনার কৃষ্ণ পদ রায়ের দপ্তরে।
এ বিষয়ে বৃহস্পতিবার দুপুরে ডিসি শাকিলা সোলতানা পূর্বকোণকে বলেন, শওকত হোসেনকে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে। উনি আসলে কোনদিনই চাকরি করতো না। সবসময় অনুপস্থিত ছিল। তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা হয়েছে। বিভাগীয় মামলায় সুপারিশ করা হয়েছে তাকে চাকরিচ্যুতির জন্য। শুধু আমাদের এখানে না, সে কুমিল্লাতে ৩৭২ দিন অনুপস্থিত ছিল। আমাদের এখানে ৭১ দিন অনুপস্থিত ছিল। নিয়ম অনুযায়ী যেটাই হয় সেটাই হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, চাকরিচ্যুতির জন্য সুপারিশ আদেশের পর তার কাছে এটা অপমানজনক মনে হয়েছে। এ কারণে তিনি নিজে থেকে অব্যাহতির জন্য আবেদন করেছেন। যদিও পরবর্তীতে এটি বিবেচনার সুযোগ ছিল না। তিনি আগে থেকে অব্যাহতির আবেদন করলে সেটি বিবেচনা করে দেখা যেত।
শওকতকে চাকরি থেকে অব্যাহতি দেওয়ার আদেশে উল্লেখ করা হয়, ৭১ দিন কর্মস্থলে অনুপস্থিত থাকার অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হয়েছে। এছাড়া অভিযুক্ত (শওকত হোসেন) শারীরিক ও মানসিকভাবে বিপর্যস্ত, পারিবারিক ও ব্যক্তিগত সমস্যা থাকায় এবং বেওয়ারিশ মানুষ নিয়ে মানবিক কার্যক্রমে ব্যস্ত থাকায় পুলিশ কনস্টেবল পদে চাকরি করা তার পক্ষে সম্ভব নয় এমন বক্তব্য লিখিতভাবে কর্তৃপক্ষকে জানানোর পর তাকে চাকরিচ্যুত করা হয়।
শওকত হোসেন নোয়াখালীর কবিরহাট উপজেলার বাসিন্দা। ২০০৫ সালে তিনি পুলিশ কনস্টেবল পদে যোগ দেন। ২০০৯ সালে ঢাকা থেকে বদলি হন রাঙামাটিতে। সেখান থেকে বদলি হয়ে আসেন চট্টগ্রাম বিভাগীয় পুলিশ হাসপাতালে। চাকরির পাশাপাশি তিনি তিন বছরের ডিপ্লোমা এবং দুই বছরের প্যারামেডিক্যাল কোর্স সম্পন্ন করেন। ২০১১ সাল থেকে তিনি চট্টগ্রামে অসহায়, দুস্থ ও বেওয়ারিশদের চিকিৎসা সেবা দিয়ে প্রশংসিত হন।
২০১৯ সালে তৎকালীন সিএমপি কমিশনার মোহাম্মদ মাহাবুবুর রহমানের আদেশে মানবিক পুলিশ ইউনিটের যাত্রা শুরু হয়। সিএমপি কমিশনার ওই সময় ব্যক্তিগত তহবিল থেকে ৫০ হাজার টাকা দেন এই ইউনিটকে।