Hathazari Sangbad
হাটহাজারীবৃহস্পতিবার , ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৩
আজকের সর্বশেষ সবখবর

খালের জলে ১৩ লাখ টাকার ডিজেল

অনলাইন ডেস্ক
ফেব্রুয়ারি ১৬, ২০২৩ ৯:৪১ অপরাহ্ণ
Link Copied!

লাইনচ্যুত ওয়াগন উদ্ধারের পর একটি থেকে ২০ হাজার লিটার ডিজেল উদ্ধার করা গেছে। তবে খালের জলে ভেসে গেছে ওই ওয়াগনে থাকা আরও ১০ হাজার লিটার ডিজেল। যার আনুমানিক মূল্য ১৩ লাখ টাকার মতো।
এছাড়া লাইনচ্যুত আরেকটি ওয়াগন থেকে কি পরিমাণ তেল নিঃস্বরিত হয়েছে তা সম্পর্কে জানাতে পারেনি রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ।
গতকাল বুধবার সন্ধ্যায় চট্টগ্রাম রেলওয়ের গুডস পোর্ট ইয়ার্ডে (সিজিপিওয়াই) একটি তেলবাহী ট্রেনের দুইটি ওয়াগন লাইনচ্যুত হয়ে পড়ে যায়। এতে ওয়াগনে থাকা ডিজেল ইয়ার্ডের ড্রেনে পড়ে পাশে গুপ্ত খালের উপ-শাখায় ছড়িয়ে পড়ে। খালটি মিশেছে কর্ণফুলী নদীর সঙ্গে। ফলে নদীতে তেল ছড়িয়ে পড়ছে বলে আশঙ্কা করছে পরিবেশ অধিদপ্তর।
 
জানা গেছে, তেলবাহী ট্রেনের ওয়াগন ইয়ার্ডে প্রবেশ করার মুহূর্তে ৫ নাম্বার লাইনে ১৬টি ওয়াগনের মধ্যে তিনটি ওয়াগন লাইচ্যুত হয়। ঘটনার সারা রাত তেল পড়তে থাকলে রাত ১টায় লাকসাম থেকে উদ্ধারকারী হাইড্রলিক রিলিফ ক্রেন ইয়ার্ডে আনা হয়। বৃহস্পতিবার সকাল ৭টায় প্রথম ওয়াগন উদ্ধার হয়, বাকি দুটি সকাল ১১টায় আরেকটি ওয়াগন উদ্ধার করা হয়। সবশেষ বিকাল ৫টার দিকে আরও একটি ওয়াগন উদ্ধার করা হয়। যেখানে ২০ হাজার লিটার ডিজেল পাওয়া গেছে।
বিষয়টি নিশ্চিত করে রেলওয়ের আরএনবির উপ-পরিদর্শক ইয়াসিন উল্ল্যাহ সিভয়েসকে বলেন, বিকাল ৫টায় একটি ওয়াগন খোলার পর সেখান থেকে ২০ হাজার লিটার ডিজেল পাওয়া গেছে। যেখানে প্রায় ৩০ হাজার লিটার ছিল।
 
এদিকে সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, ওয়াগন থেকে পড়া তেলের কারণে খালের পানি রং পাল্টে গেছে। রাতে ট্রেনের থেকে স্থানীয় এলাকাবাসী ডিপো সংলগ্ন ব্রিজের নিচে তেল কুড়াতে ভিঢ় করে।
 
এসহাক ডিপোর কর্মরত ট্রলি হেলপার শরিফ উদ্দিন বলেন, গত রাতে আমি ১৫ লিটার তেল পেয়েছি। তখন তেল খালের মুখে ছিল। কিন্তু সকাল থেকে ছড়িয়ে পড়েছে।
 
১০৯ লিটার তেল পেয়েছেন স্থানীয় মোহাম্মদ সিদ্দিক। তিনি বলেন, সকাল থেকে দুই ছেলেকে নিয়ে ১০৯ লিটার তেল সংগ্রহ করেছি। বিক্রি করেছি লিটার প্রতি ৬০ টাকা দরে।
অন্যদিকে সকাল থেকে চট্টগ্রাম পরিবেশ অধিদপ্তরের দুইটি টিম সম্ভাব্য তিনটি জায়গা থেকে নমুনা সংগ্রহ করেছে। যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য ইসাক ডিপোর থেকে ৫০০ মিটার দূরে গুপ্ত খাল, ১৪ নাম্বর ঘাট ও ১৫ নাম্বার ঘাট। পরিবেশ অধিদপ্তরের দাবি— এসহাক ডিপোর পাশে গুপ্ত খালে ডিজেল ছড়িয়ে পড়েছে। দুর্ঘটনার সময় খালে জোয়ার থাকায় কর্ণফুলী নদীতে ছড়িয়ে পড়ার সম্ভাবনাও রয়েছে।
 
পরিবেশ অধিদপ্তরের পরিদর্শক মো. মনির বলেন, গুপ্ত খাল সংলগ্ন নদী ও বিভিন্ন খালে তেল ছড়িয়ে পড়ার আলামত দেখা গেছে। তবে কি পরিমাণ তেল ছড়িয়ে পড়েছে সেটা ল্যাব টেস্টের পর বোঝা যাবে। খাল সংলগ্ন সুইচ গেট বন্ধ থাকায় তেল তুলনামলক কম ছড়িয়েছে। তা না হলে আরো বেশি ছড়াতো।
 
খালে তেল পরে যাওয়ার ঘটনায় পরিবেশের ব্যাপক ক্ষতি হবে বলে জানিয়েছেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ও হালদা নদী গবেষক মনজুরুল কিবরীয়া। তিনি বলেন, তেল যদি খালের মাধ্যমে নদীতে ছড়িয়ে যায়। তাহলে পরিবেশ বিপর্যয়ের শঙ্কা থাকবে।
 
বিভাগীয় রেলওয়ে ব্যবস্থাপক আবিদুর রহমান বলেন, যেহেতু এঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠিত হয়েছে। তাই আমি মন্তব্য করতে চাইছি না। তদন্ত রিপোর্ট দেওয়ার পর সবকিছু জানা যাবে। যতটুকু তেল ছড়িয়েছে বলা হচ্ছে, ততটুকু তেল পড়েনি।
 
ডিজেল ঠেকাতে ড্রেন বন্ধ না করার ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমরা যখন ঘটনাস্থলে এসেছি। তখন ওয়াগনের মুখ বন্ধ করে দিয়েছি। অন্যান্য উৎসগুলোও যতটুকু সম্ভব বন্ধ রাখার চেষ্টা করেছি।