প্রথম টেস্টেও বাংলাদেশের ক্রিকেটারদের দর্শক বানিয়ে রানের পাহাড় গড়েছিল শ্রীলঙ্কা। সিলেট টেস্টে যেখানে বিজয়ী সফরকারীরা থেমেছিল, সেখান থেকেই যেন তারা চট্টগ্রাম টেস্টেও রানের পসরা সাজিয়েছে। এতে অবশ্য বড় ভূমিকা ছিল স্বাগতিক ক্রিকেটারদের। অবিশ্বাস্য সব ক্যাচ হাতছাড়া করে তারা লঙ্কান ইনিংস বড় করতে সহায়তা করেছেন! প্রথম ইনিংসে অলআউট হওয়ার আগে রেকর্ড গড়ে লঙ্কানদের সংগ্রহ ৫৩১ রান।
রানের পাহাড় গড়লেও দ্বিতীয় টেস্টের প্রথম ইনিংসে লঙ্কান ব্যাটারদের কেউ সেঞ্চুরির দেখা পাননি। তাদের হয়ে অর্ধশতক পূর্ণ করেছেন ছয়জন ব্যাটার। আর এর মাধ্যমেই সেঞ্চুরিবিহীন এক ইনিংসে সর্বোচ্চ রানের রেকর্ড গড়ল ধনাঞ্জয়া ডি সিলভার দল। এর আগে ১৯৭৬ সালে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ভারত টেস্টের এক ইনিংসে ৫২৪ রান করেছিল। যা ছিল কোনো ব্যাটারের সেঞ্চুরি ছাড়া টেস্ট ইনিংসে সর্বোচ্চ রানের রেকর্ড। সেটি টপকে আরও ৭ রান বেশি করেছে লঙ্কানরা।
অবশ্য সেই রেকর্ড আর গড়া হতো না, যদি কামিন্দু মেন্ডিস সেঞ্চুরি পেয়ে যেতেন। দশম উইকেটে তার সঙ্গে ব্যাটে ছিলেন পেসার আসিথা ফার্নান্দো। তাই ঝুঁকি না নিতে তাইজুল ইসলামের করা ওভারের শেষ ডেলিভারিতে সিঙ্গেল রান নিতে যান কামিন্দু। যাতে সাড়া দিতে গিয়ে নন-স্ট্রাইকে থাকা আসিথা রানআউটের ফাঁদে পড়েছেন। ফলে ৯২ রানে অপরাজিত থেকে ফিরতে হয় কামিন্দুকে, এতে আরও একটি সেঞ্চুরির আক্ষেপ নিয়ে ইনিংস শেষ হলো সফরকারীদের। এর আগে দ্রুত তিন অঙ্কের ঘরে পৌঁছাতে কামিন্দু তাইজুলের ওভারটিতে দুটি ছয় হাঁকিয়েছেন।
ক্রীড়াভিত্তিক ওয়েবসাইট ইএসপিএন ক্রিকইনফোয় এক বিশ্লেষক লিখেছেন, চট্টগ্রাম টেস্টের প্রথম ইনিংসে বাংলাদেশ খুব সম্ভবত ন্যূনতম পাঁচটি ক্যাচ ছেড়েছে। টেস্ট ম্যাচে এত সুযোগ হাতছাড়া হলে কী হতে পারে তার নমুনাই ছিল যেন লঙ্কানদের রেকর্ড রান। ১১ ঘণ্টায় তারা ১৫৯ ওভার ব্যাট করে ৫৩১ রান তুলেছে। প্রথম দিন শেষে শ্রীলঙ্কার সংগ্রহ ছিল ৪ উইকেটে ৩১৪। আজ শেষ ছয় উইকেটে তারা আরও ২১৭ রান যোগ করেছে।
লঙ্কানদের হয়ে সর্বোচ্চ ৯৩ রান এসেছে কুশল মেন্ডিসের ব্যাটে। নার্ভাস নাইন্টিতে আউট হওয়া দ্বিতীয় ব্যাটসম্যান কামিন্দু, ১৬৭ বলে তিনি ৯২ রানে অপরাজিত ছিলেন। এছাড়া অর্ধশতক পেয়েছেন আরও চার ব্যাটার। যথাক্রমে বড় পুঁজি গড়তে অবদান রেখেছেন দিমুথ করুণারত্নে ৮৬, ডি সিলভা ৭০, দিনেশ চান্দিমাল ৫৯ ও নিশান মাদুশকা ৫৭ রান।
বাংলাদেশের হয়ে ১১০ রান খরচায় সর্বোচ্চ ৩ উইকেট নিয়েছেন এক বছর টেস্টে ফেরা সাকিব আল হাসান। এছাড়া অভিষিক্ত হাসান মাহমুদ ২টি এবং খালেদ আহমেদ ও মেহেদী হাসান মিরাজ একটি করে উইকেট শিকার করেছেন।