রাজধানী ঢাকা থেকে অপহৃত নয় বছর বয়সী এক শিশুকে চট্টগ্রাম থেকে উদ্ধার করেছে র্যাব। এ সময় তিন অপহরণকারীকে গ্রেফতার করা হয়।
রোববার বিকেলে এ তথ্য নিশ্চিত করেন র্যাব-৭ এর সিনিয়র সহকারী পরিচালক (মিডিয়া) নুরুল আবছার। এর আগে, শনিবার রাত থেকে রোববার ভোর পর্যন্ত নগরের হালিশহর ও হাটহাজারী এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারকৃতরা হলেন- হাটহাজারী উপজেলার ফরহাদাবাদ এলাকার তোফায়েল আহমেদের ছেলে আবু সুফিয়ান রানা, তার স্ত্রী শারমিন কাওসার হান্না এবং একই উপজেলার চিপাতলী এলাকার আবুল হোসেনের ছেলে নুরুজ্জামান।
র্যাব জানায়, ভুক্তভোগী শিশু রাজধানীর মিরপুরের একটি স্কুলের পঞ্চম শ্রেণির ছাত্রী। কিছুদিন আগে শহিদুল করিম নামে এক দুবাই প্রবাসীর সঙ্গে তার বড় বোনের বিয়ে হয়। বিয়ের পর কনের পরিবার জানতে পারে- বাংলাদেশ থেকে দুবাইয়ে নারী পাচারে জড়িত শহিদুল। বিয়ের পর স্ত্রীকে দুবাই নিলেও দুবাই নাইট লাইফের কাছে তাকে বিক্রি করে অন্য দেশে থাকতে শুরু করেন শহিদুল। ঐ পাচারের পরপরই ভুক্তভোগীকেও পাচারের পরিকল্পনা করেন তিনি।
গত ৩ জানুয়ারি সকালে মাদরাসার উদ্দেশে বাসা থেকে বের হয় ভুক্তভোগী। এরপর দীর্ঘসময় অতিবাহিত হলেও বাড়ি না ফেরায় বিভিন্নস্থানে খোঁজাখুঁজি করেন স্বজনরা। খোঁজাখুঁজির একপর্যায়ে তারা জানতে পারেন- বিদেশে পাচারের উদ্দেশে ভুক্তভোগীকে অপহরণ করে অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে গেছেন শহিদুল এবং তার দুই সহযোগী সাকিব ও নুরুজ্জামান। এ ঘটনায় তাদের বিরুদ্ধে রাজধানীর শাহআলী থানায় মামলা করেন ভুক্তভোগীর মা।
র্যাবের সিনিয়র সহকারী পরিচালক নুরুল আবছার বলেন, গোপন সংবাদে র্যাব জানতে পারে- রাজধানী থেকে শিশু অপহরণে জড়িত ও আশ্রয়দাতা সন্দেহভাজন দুইজন চট্টগ্রাম নগরের হালিশহর থানার চৌধুরীপাড়া এলাকার একটি বাসায় অবস্থান করছেন। শনিবার রাতে সেখানে অভিযান চালিয়ে দুইজনকে গ্রেফতার করা হয়। পরে তাদের দেওয়া তথ্যে রোববার ভোরে হাটহাজারী উপজেলার চিপাতলী এলাকা থেকে আরো একজনকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারের পর জিজ্ঞাসাবাদে বিভিন্ন তথ্য দেন তারা। এ তথ্যে একইদিন সকালে সাতকানিয়া উপজেলার নলুয়া এলাকার একটি বাড়ি থেকে ভুক্তভোগী শিশুকে উদ্ধার করা হয়।
তিনি আরো বলেন, গ্রেফতারকৃতরা একটি সিন্ডিকেটের সদস্য। অসহায় মেয়েদের ভালো চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে দুবাই পাচার করতেন তারা। শিশুটিকে অপহরণ করে দুবাইয়ে পাচারের উদ্দেশে চট্টগ্রামে নিয়ে আসেন। পরবর্তী আইনি ব্যবস্থা নিতে তাদের সংশ্লিষ্ট থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।