Hathazari Sangbad
হাটহাজারীশনিবার , ২১ জানুয়ারি ২০২৩
আজকের সর্বশেষ সবখবর

হতাশায় বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীর আত্মহত্যা

অনলাইন ডেস্ক
জানুয়ারি ২১, ২০২৩ ৮:০২ অপরাহ্ণ
Link Copied!

চাকুরি না পেয়ে এবং শারীরিক অসুস্থতার কারণে হতাশাগ্রস্ত হয়ে আত্মহত্যা করেছেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) নৃ-বিজ্ঞান বিভাগের সাবেক শিক্ষার্থী হাবিবুর রহমান (২৭)। তিনি যশোরের চৌগাছা উপজেলার স্বরূপদাহ ইউনিয়নের জলকার-মাধবপুর গ্রামের মৃত আয়নাল হকের ছেলে।
সম্প্রতি ফলাফল প্রকাশ হওয়া প্রাথমিকের সহকারী শিক্ষক পদেও তিনি ভাইভা দিয়েছিলেন। তবে প্রতিবন্ধী কোটা থাকলেও চূড়ান্তভাবে তিনি নির্বাচিত হননি। এ নিয়ে তার মধ্যে হতাশা ছিল।
শুক্রবার (২০ জানুয়ারি) দুপুরে গ্রামে নিজ বাড়িতে ফ্যানের সঙ্গে গলায় রশি দিয়ে আত্মহত্যা করেন তিনি।
 
নিহতের বড়ভাই আনিছুর রহমানের বরাত দিয়ে চৌগাছা থানার উপ-পরিদর্শক জয়নুল ইসলাম বলেন, চাকরি না পাওয়ার হতাশা থেকেই তিনি আত্মহত্যা করেছেন। এছাড়া অন্য কোনো কারণ পাওয়া যায়নি।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, শুক্রবার দুপুরে হাবিবুরকে বাড়ির একটি কক্ষে বৈদ্যুতিক পাখার হুকের সঙ্গে গলায় রশি দিয়ে ঝুলতে দেখে ভাতিজি চিৎকার শুরু করে। পরে পরিবারের সদস্যরা এসে রশি কেটে নামিয়ে দেখেন হাবিবুরের মৃত্যু হয়েছে।
 
খবর পেয়ে চৌগাছা থানার পরিদর্শক (তদন্ত) ইয়াসিন আলম চৌধুরীসহ পুলিশের একটি দল ঘটনাস্থলে যায়। সেখানের পরিবারের সদস্য ও গ্রামের লোকজনের অনুরোধে এবং আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ময়নাতদন্ত ছাড়াই মরদেহ দাফনের অনুমতি দেওয়া হয়। পরে সন্ধ্যায় পারিবারিক কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়।
 
হাবিবুরের বড় ভাই মাহবুব রহমান বলেন, ওর (হাবিবুর) একটা চোখ নষ্ট। এজন্য ও সব সময় মানুষ থেকে দূরে থাকতো। এরপরে পড়ালেখা করতে করতে আরেকটা চোখে মারাত্মক ব্যথা শুরু হয়। ওকে চিকিৎসার জন্য ভারতে নিয়ে যেতে বলেছিল ডাক্তার। সেখানে নিয়ে যাওয়ার জন্য পাসপোর্ট-ভিসা করার প্রক্রিয়াও চলছিল। এরমধ্যে প্রাথমিকের রেজাল্ট দেওয়ার পর চাকরি না হওয়ায় আবারও পড়াশোনা শুরু করলে চোখের ব্যথা আরও বেড়ে যায়। এতে সে ভয় পেয়ে যায় যে আরেকটা চোখও হয়তো নষ্ট হয়ে যাবে। সবমিলিয়ে সে হতাশায় সে এ ঘটনা ঘটিয়ে ফেলেছে।
তিনি বলেন, আমরা পাঁচ ভাই, দুই বোনের মধ্যে হাবিবুর সবার ছোট। সে ২০১২ সালে এসএসসি, ২০১৪ সালে যশোর ক্যান্টনমেন্ট কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়। বছরখানেক আগে তার লেখাপড়া শেষ হয়।
 
মাহবুব রহমান আরও বলেন, ওর আরও সুযোগ ছিল, বয়সও ছিল। আমি নিজেই এখনো চাকরি পাইনি। ও তো প্রথমবার প্রাইমারিতে টিকেছিল। ও আরও ভালো চাকরি পেত। কারণ ওর প্রতিবন্ধী সনদও রয়েছে। কাজেই গ্রামের লোক যে বলছে প্রাইমারির চাকরি না পেয়েই সে আত্মহত্যা করেছে, এটা সঠিক নয়।
 
চৌগাছা থানার পরিদর্শক (তদন্ত) ইয়াসিন আলম চৌধুরী ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, পরিবারের সদস্যদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ময়নাতদন্ত ছাড়াই মরদেহ দাফনের অনুমতি দেওয়া হয়েছে।