শুরুটা হয়েছিল ধীরগতির। নিউ জিল্যান্ড প্রথম তিন ওভারে নেয় মাত্র ১৬ রান। এরপর ঝড় তোলেন ফিন অ্যালেন। তিনি বিদায় নেওয়ার পর ডেভন কনওয়ের সঙ্গে জুটিতে মুগ্ধতা ছড়ান কেন উইলিয়ামসন। এই বিশ্বকাপে নিজের সেরা পারফরম্যান্স করেন।
কিন্তু উইলিয়ামসনকে ছাপিয়ে শেষবেলায় নাম কুড়ালেন জশ লিটল। প্রথম তিন ওভারে ১৯ রান দেওয়া এই স্পিনার করেন হ্যাটট্রিক, যে অর্জনের পথে তার প্রথম শিকার উইলিয়ামসন। এরপর জিমি নিশাম ও মিচেল স্যান্টনারকে প্যাভিলিয়নের পথ দেখান। দ্বিতীয় আইরিশ হিসেবে ছোট ফরম্যাটে হ্যাটট্রিক করলেন তিনি।
ওই ধাক্কায় শেষ দুই ওভারে তিন উইকেটের বিনিময়ে মাত্র ১২ রান যোগ করে নিউ জিল্যান্ড।
এর আগে ১৮ ওভারে ১৭৩ রান তোলে নিউ জিল্যান্ড ৩ উইকেট হারিয়ে। উইলিয়ামসন সামনে থেকে নেতৃত্ব দেন। ৩২ বলে চারটি চার ও দুটি ছয়ে হাফ সেঞ্চুরি করেন তিনি। ডেভন কনওয়ের সঙ্গে ৪৪ রান ও ড্যারিল মিচেলের সঙ্গে ৬০ রানের জুটিতে দলকে বড় সংগ্রহের পথে নিতে থাকেন।
আউট হওয়ার আগের চার বলে দুটি ছয় ও একটি চারও মেরে জ্বলছিলেন উইলিয়ামসন। কিন্তু নিভে যান লিটলের বলে। ৩৫ বলে ৫ চার ও ৩ ছয়ে ৬১ রান করেন তিনি। মিচেল ২১ বলে ২ চারে ৩১ রানে অপরাজিত ছিলেন।
বলা যায়, লিটলের ওই ধাক্কা না লাগলে স্কোর দুইশর কাছাকাছি থাকতো। সেটা আর হলো কোথায়, ৬ উইকেটে ১৮৫ রানে থামে নিউ জিল্যান্ড।
৪ ওভারে ২২ রান দিয়ে ৩ উইকেট নিয়ে সেরা বোলিং করেছেন লিটল। ডিলানি ৪ ওভারে ৩০ রান দেন, নেন ২ উইকেট।
হ্যাটট্রিকে লিটলের ইতিহাস
কেন উইলিয়ামসন ঝড় থামানোর পর আরও দুটি উইকেট নিয়ে হ্যাটট্রিক করলেন জশ লিটল। নিজের শেষ ওভারের দ্বিতীয় বলে কিউই অধিনায়ককে গ্যারেথ ডিলানির ক্যাচ বানান এই স্পিনার। পরের দুই বলে জিমি নিশাম ও মিচেল স্যান্টনারকে এলবিডব্লিউ করেন। দুই ব্যাটসম্যানই রিভিউ নেন, কিন্তু বাঁচতে পারেননি। আয়ারল্যান্ডের দ্বিতীয় বোলার হিসেবে টি-টোয়েন্টিতে হ্যাটট্রিক করলেন লিটল।
এই বিশ্বকাপে এটি দ্বিতীয় হ্যাটট্রিক। এর আগে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে সংযুক্ত আরব আমিরাতের লেগস্পিনার কার্তিক মেয়াপ্পন চলতি আসরের প্রথম হ্যাটট্রিক করেন।
ছয় মেরে উইলিয়ামসনের পঞ্চাশ
ফর্ম নিয়ে অনেক কথা শুনতে হয়েছে। সমালোচকদের মুখ এবার বন্ধ করে দিলেন কেন উইলিয়ামসন। ১৮তম ওভারে ছক্কা মেরে ৩২ বলে হাফ সেঞ্চুরি করলেন তিনি। চারটি চার ও দুটি ছয়ে পঞ্চাশ ছোঁন নিউ জিল্যান্ড অধিনায়ক। আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে ১৮ ওভার শেষে নিউ জিল্যান্ডের সংগ্রহ ৩ উইকেটে ১৭৩ রান।
ডিলানির জোড়া আঘাতে কিউইদের ছন্দপতন
নিজের প্রথম ওভারে ১৩ রান দেওয়া গ্যালেথ ডিলানি তার শেষ দুই ওভারে জোড়া আঘাত হানলেন। ডেভন কনওয়ে ও গ্লেন ফিলিপসকে ফেরালেন তিনি।
আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে ১৪ ওভার শেষে ৩ উইকেটে নিউ জিল্যান্ডের সংগ্রহ ১১৮ রান। কনওয়ে ৩৩ বলে ২৮ রান করেন দুটি চারে। ফিলিপস ৯ বলে ২ চার ও ১ ছয়ে ১৭ রান করেন।
অ্যালেন ঝড়ে পাওয়ার প্লেতে দুর্দান্ত নিউ জিল্যান্ড
আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে প্রথম তিন ওভারে মাত্র ১৬ রান। বাকি তিন ওভারে এলো আরও ৩৬ রান। পাওয়ার প্লের শেষ দিকে এই রান এলো ফিন অ্যালেন ঝড়ে। ৬ ওভারে ১ উইকেট হারিয়ে নিউ জিল্যান্ডের স্কোর ৫২ রান।
চতুর্থ ওভারে গ্যারেথ ডিলানি প্রথমবার বল হাতে নেন। তার ওই ওভারে তিনটি চার মারেন অ্যালেন। পরের ওভারে জশ লিটলের কাছ থেকে একটি এবং ষষ্ঠ ওভারে টানা দুই বলে মার্ক অ্যাডাইরকে ছয় ও চার হাঁকান। ১ রানে মিড অফে হ্যারি টেক্টরের হাতে জীবন পাওয়া কনওয়েও তাকে বাউন্ডারি মারেন।
অ্যালেন অবশ্য ফিরে গেছেন পাওয়ার প্লে শেষ হওয়ার এক বল আগেই। ফিওন হ্যান্ডের হাতে ক্যাচ দেন তিনি। ১৮ বলে ৫ চার ও ১ ছয়ে ৩২ রান করেন অ্যালেন। ৫২ রানে ভাঙে উদ্বোধনী জুটি।
সেমিফাইনাল বাজি রেখে সুপার টুয়েলভের শেষ ম্যাচ খেলতে নেমেছে নিউ জিল্যান্ড। এই ম্যাচ জিতলে সেমিফাইনাল অনেকটাই নিশ্চিত তাদের।