চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষের ‘সি’ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা নতুন মানবন্টন অনুযায়ী নেওয়ার প্রাথমিক সিদ্ধান্ত হয়েছে। সিদ্ধান্তটি পরবর্তী কোর-কমিটির মিটিংয়ে চূড়ান্ত হবে বলে আশা ইউনিটটির ভর্তি কমিটির কো-অর্ডিনেটর ও ব্যবসায় অনুষদের ডিন অধ্যাপক মো. হেলাল উদ্দিন নিজামীর।
বৃহস্পতিবার (২১ ডিসেম্বর) বেলা ১১টায় সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় অধ্যাপক হেলাল উদ্দিন নিজামী নতুন মানবন্টনের বিষয়ে বিস্তারিত জানান।
অধ্যাপক হেলাল উদ্দিন নিজামী বলেন, এ মানবন্টনে আমরা তিনটি বিষয়ের ওপর গুরুত্ব দিয়েছি।
সেগুলো হলো – ফান্ডামেন্টাল কমিউনিকেশন স্কিল, এনালিটিক্যাল স্কিল এবং প্রবলেম সলভিং স্কিল। আমরা চাই মেধাবী শিক্ষার্থীদের এ টেস্টগুলোর মধ্য দিয়ে পরিচালনা করতে। এ তিনটি স্কিলে আমরা যদি শিক্ষার্থীদের যাচাই করতে পারি, তাহলে আমরা মনে করি তারা বিজনেজ গ্র্যাজুয়েট হয়ে দেশ ও দেশের বাইরে স্টেকহোল্ডার হিসেবে নিজেদের কৃতিত্বের স্বাক্ষর রাখতে পারবে।
অধ্যাপক হেলাল উদ্দিন নিজামী বলেন, প্রশ্ন উঠতে পারে, আমরা বিগত দিনে শিক্ষার্থীদের যেভাবে পরীক্ষা নিয়েছি, সেগুলো পারদর্শিতার জন্য যথেষ্ট ছিল না? হ্যাঁ, ছিলো। তবে সময়ের বিবেচনায় এটা প্রয়োজন। শিক্ষার মাধ্যমিক, উচ্চমাধ্যমিকে বিবর্তনের ফলে আমাদের সাবেক শিক্ষার্থীরা আগের তুলনায় বিগত ১০ বছর জাতীয় এবং আন্তর্জাতিকভাবে কাঙ্ক্ষিত ভূমিকা রাখতে পারছে না।
তিনি আরো বলেন, একটা বিশ্ববিদ্যালয়ের যখন র্যাংকিংয়ের প্রশ্ন আসে তখন দেখা হয়, ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থীদের অবস্থান কোথায়। এখন আমরা বর্তমান শিক্ষার্থীদের যখন ভাইভা নিই, তখন দেখি তাদের শিক্ষার অবস্থা বিগত ১০-১৫ বছরের তুলনায় খুবই নিম্নমুখী।
এ মানবন্টনে শিক্ষার্থীদের সমস্যা হবে কি-না এবং এটি শিক্ষার্থীদের জন্য কম সময় কি-না, এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এটা কম সময় না। এক্ষেত্রে শিক্ষার্থীদের কোনোরকম সমস্যা হবে না। কারণ আমরা যেভাবে পরীক্ষা নেওয়ার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিয়েছি, তার একটা দিক-নির্দেশনা দেওয়ার জন্য আমরা একটা কমিটি গঠন করে দিয়েছি।
তিনি বলেন, এ কমিটিকে আগামী ২-৩ দিনের মধ্যেই একটি মডেল/গাইডলাইন রিপোর্ট দিতে বলেছি। যাতে অ্যানালাইটিক্যাল স্কিল বলতে কি বোঝায়? এর আওতায় কি ধরনের প্রশ্ন হতে পারে? তার একটি বিস্তারিত থাকবে। প্রতিবছর মৌলিক ইংরেজিতে ৩০ নম্বরের পরীক্ষা হয়। এবার আমরা সেটা ৪০ করেছি। সুতরাং আমাদের নতুন মানবন্টনে যেটা যোগ হয়েছে সেটা হলো প্রবলেম সলভিং স্কিল।
এর মধ্যে ব্যবসা, বিজ্ঞান, অর্থনীতি, আইসিটি সকল বিষয় সংক্ষিপ্ত আকারে সংযুক্ত করা হবে জানিয়ে অধ্যাপক হেলাল উদ্দিন নিজামী বলেন, মেধার ভিত্তিতে শিক্ষার্থীরা জায়গা পাবে। এ মানবন্টন পরীক্ষায় শিক্ষার্থীদের সুবিধা হবে বলে মনে করছি। এখানে সম্পূর্ণ সৃজনশীল আকারে প্রশ্ন হবে। এখানে মুখস্থ বিদ্যা থাকবে না। যেমন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইবিএ পরীক্ষায় হয়ে থাকে।
সিলেবাস পরিবর্তনের ক্ষেত্রে সমালোচনার বিষয়ে তিনি বলেন, সমালোচনা হবে এটা আমরা গ্রহণ করি। তবে শিক্ষার মান ত্বরান্বিত করতে আমাদের কাজ করতে হবে।
অন্য বিভাগ থেকে আসা শিক্ষার্থীরা নিজেদের খাপ খাওয়াতে পারবে কি-না জানতে চাইলে তিনি বলেন, এখানে বিজ্ঞান বিভাগ থেকে আসা শিক্ষার্থীরা অনেক ভালো করে। যদিও তারা হিসাববিজ্ঞান পড়ে আসে না। একজন শিক্ষার্থী আইন কিংবা সাংবাদিকতা পড়ে আসে না। তারা এখানে আসার পর এগুলো আয়ত্ত করে। আমাদের সিলেবাসও এভাবে সাজানো। তাই কোনো সমস্যা হবে না।